ওজন কমানোর সহজ উপায় - weight loss tips
শরীরের অতিরিক্ত ওজন নারী পুরুষ উভয়ের জন্যই একটি অস্বস্তিকর বিষয়। শরীরের ওজন বা weight বেড়ে যাওয়ার মূল কারণই হচ্ছে অস্বাভাবিক জীবন যাপন। ওজন কমানোর কথা চিন্তা করলেই প্রথমেই আমাদের মাথায় আসে ডায়েটের কথা। তবে ডায়েট ছাড়াও আরো অনেকভাবে ওজন কমানো সম্ভব।
কেউ কেউ দাবি করেন কম খাওয়া এবং বেশি ব্যায়াম করা, আবার আরো কেউ কেউ বলেন কম চর্বি খাওয়াই একমাত্র উপায়, আবার কেউ কেউ কার্বোহাইড্রেট বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেন। আসলে স্থায়ী স্বাস্থ্যকর ওজন হ্রাসের জন্য কোনও একটির মাধ্যমে সমাধান পাওয়া সম্ভব নয়। একজন ব্যক্তির জন্য যা কাজ করে তা অন্যের জন্য কাজ নাও করতে পারে।
যেহেতু আমাদের দেহগুলি জেনেটিক্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত কারণগুলির উপর নির্ভর করে বিভিন্ন খাবারে ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া করে সেহেতু আপনার জন্য সঠিক ওজন কমানোর পদ্ধতিটি খুঁজে পেতে সম্ভবত সময় লাগবে এবং ধৈর্য, প্রতিশ্রুতি এবং বিভিন্ন খাবার এবং ডায়েট নিয়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হবে।
সুতরাং, যদি অন্য কারো জন্য কাজ করে এমন একটি ডায়েট আপনার জন্য কাজ না করে তবে নিরুৎসাহিত হবেন না। মনে রাখবেন ওজন কমানো কোনো সহজ কাজ না হলেও, খাবারের সাথে স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক গড়ে তুলতে, অতিরিক্ত খাওয়ার জন্য মানসিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং স্বাস্থ্যকর ওজন অর্জনের জন্য আপনি প্রচুর পদক্ষেপ নিতে পারেন।
নিম্নে আমরা ওজন কমানোর কিছু কৌশল বা weight loss tips নিয়ে আলোচনা করব।
ক্যালোরি কমানো
কিছু বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করেন যে আমাদের ওজন সফলভাবে কন্ট্রোল করার একটি সহজ সমীকরণ হচ্ছে যে, আমরা যদি আমাদের ক্যালরি বার্ন করার চেয়ে ক্যালরি কম গ্রহণ করি তাহলে আমাদের ওজন হ্রাস পায়। সুতরাং আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে আমরা যে পরিমাণ ক্যালরি গ্রহণ করি তার চেয়ে যেন বেশি পরিমাণ ক্যালরি আমরা বারণ করতে পারি।
কারণ আমাদের দেহের অতিরিক্ত ক্যালরি আমাদের ওজন বৃদ্ধিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। যদিও আমরা ক্ষুধা মেটানোর জন্য বা আরামের জন্য অথবা স্ট্রেস উপশমের জন্য খাবারের দিকে ঝুকে পরি যা ওজন কমানোর যে কোন পরিকল্পনাকে ধূলিসাৎ করতে পারে।
কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ কমানো
আমাদের খাদ্যে ক্যালোরি গ্রহণ কমানোর সাথে সাথে আমাদের কার্বোহাইড্রেট ও কম গ্রহণ করতে হবে। কারণ আমরা যখন খাবার খাই তখন খাবার থেকে কার্বোহাইড্রেট আমাদের রক্তে গ্লুকোজ হিসাবে প্রবেশ করে। আর এই কার্বোহাইড্রেট আমাদের ওজন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
এইজন্য আমাদের কম কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার যেমন চর্বিহীন মাংস বা সামুদ্রিক মাছ গ্রহণ করতে হবে।
চর্বি কমানো
এটি অনেক ডায়েটের মূল ভিত্তি: আপনি যদি চর্বি পেতে না চান তবে চর্বি খাবেন না। যদিও সব চর্বি খারাপ নয়। স্বাস্থ্যকর বা "ভাল" চর্বি আসলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে, সেইসাথে আপনার মেজাজ কন্ট্রোল করতে এবং ক্লান্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
অ্যাভোকাডো, বাদাম, বীজ, সয়া দুধ এবং চর্বিযুক্ত মাছে পাওয়া অসম্পৃক্ত চর্বি আপনি গ্রহণ করতে পারেন।
ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য গ্রহণ
ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যে ভাল চর্বি এবং ভাল কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার সাথে সাথে প্রচুর পরিমাণে তাজা ফল এবং শাকসবজি, বাদাম, মাছ এবং জলপাইয়ের তেল-এবং শুধুমাত্র সামান্য পরিমাণে মাংস এবং পনির খাওয়ার উপর আমাদের জোর দেওয়া উচিত।
ব্যায়াম
ব্যায়াম আপনার বিপাক বাড়াতে পারে এবং আপনার দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত করতে পারে—এবং এটি এমন কিছু যা থেকে আপনি এখনই উপকৃত হতে পারেন। হাঁটার জন্য যান, ঘুরে বেড়ান এবং আপনার ওজন কমানোর জন্য অন্যান্য পদক্ষেপগুলি মোকাবেলা করতে আপনাকে শক্তি যোগাবে।
দীর্ঘ ওয়ার্কআউটের জন্য সময়ের অভাব? প্রতিদিন তিনটি সেশনে 10-মিনিটের ব্যায়াম একটি 30-মিনিট ওয়ার্কআউটের মতোই ভাল হতে পারে। মনে রাখবেন: কিছু না করার চেয়ে অল্পকিছু করা ভালো। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে শারীরিক ক্রিয়াকলাপ দিয়ে ধীরে ধীরে শুরু করুন।
তারপরে, আপনার যখন ওজন কমতে শুরু করে এবং আরও শক্তি পান, তখন আরও শারীরিকভাবে সক্রিয় হন। আপনি উপভোগ্য ব্যায়াম খুঁজুন যেমন বন্ধুর সাথে হাঁটা, নাচ, সাইকেল চালানো, বাস্কেটবল খেলা বা আপনার বাচ্চাদের সাথে কার্যকলাপ-ভিত্তিক ভিডিও গেম খেলার চেষ্টা করুন।
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে অর্থাৎ বেশি রাত পর্যন্ত জাগার ফলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। প্রতিদিন অন্তত সাত থেকে আট ঘন্টা আমাদের ঘুমানো উচিত তাহলে আমাদের বিপাকক্রিয়া যথাযথভাবে কাজ করবে।
খাদ্য গ্রহণের পূর্বে পানি পান করা
আমরা জানি যে খাওয়া গ্রহনের আধা ঘন্টা পরে পানি পান করতে হয় কিন্তু আমরা যদি খাবার আগে এক গ্লাস পানি পান করি তাহলে আমাদের পেটে জায়গা কমে যাবে এবং আমরা কম খাদ্য গ্রহণ করব। এছাড়াও আমাদের সারাদিনে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে কারণ পানি বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে।
গ্রিন টি
একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রতিদিন গ্রিন টি খেলে অতিরিক্ত ক্যালরি ক্ষয় হয় পরে আমাদের ওজন হ্রাস পায়। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে গ্রিনটিতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আমাদের কজন হ্রাসে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন আমাদের কয়েক কাপ গ্রিন টি পান করা উচিত।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url